কলকারখানা ও শিল্প মালিক এবং শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষায় কাজ করছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার - ড. এম সাখাওয়াত হোসেন
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, আমরা কলকারখানা ও শিল্প মালিক এবং শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষায় নিবিড়ভাবে কাজ করছি। আইএলও এর পরামর্শ শুনছি এবং কাজ করছি। নিশ্চিত করছি আইএলও-এর সাথে আমাদের সুম্পর্ক থাকবে।
আজ রাজধানীর হোটেল ওয়েস্টিনে বাংলাদেশের শিল্প সম্পর্ক ব্যবস্থার রূপান্তর নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের সংলাপে অংশগ্রহণ করে উপদেষ্টা এসব কথা বলেন। তিনি মালিক পক্ষকে বলেন, শ্রমিকদের সাথে সম্পর্ক তৈরি করুন। যারা সম্পর্ক ভালো করেছেন তাদের প্রতিষ্ঠান সুফল পাচ্ছে। আমাদের সময় দিতে হবে আমরা শ্রম শিল্পের উন্নতি করবো। এছাড়া শ্রম সংস্কার কমিশন থেকে সুপারিশ আসবে। শ্রমঘন অঞ্চলে আইএলও এর সুপারিশ বাস্তবায়িত হবে।
উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়নের গতিপথ এখন এমন একটি পর্যায়ে পৌঁছেছে যেখানে আমাদের ক্রমবর্ধমান শ্রমশক্তিকে উন্নত ও সুরক্ষিত করার জন্য সমন্বিত শিল্প সম্পর্কের গুরুত্বকে আমরা স্বীকার করতে বাধ্য। আমি স্বীকার করছি যে, বাংলাদেশের জন্য এই বিষয়টি আরও গুরুত্বপূর্ণ এবং তাৎপর্যপূর্ণ। আমাদের দেশ এখন উন্নত শ্রম পরিবেশ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে একটি রূপান্তর প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এ লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকার ইতোমধ্যে বিভিন্ন সেক্টরে সংস্কার কমিশন গঠন করেছে, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো শ্রম সংস্কার কমিশন উপদেষ্টা বলেন, একটি প্রতিযোগিতামূলক, বাজারভিত্তিক অর্থনীতি গড়ে তোলার জন্য একটি শক্তিশালী শিল্প সম্পর্ক ব্যবস্থা অপরিহার্য। জাতীয়, ক্ষেত্রভিত্তিক এবং প্রতিষ্ঠানিক পর্যায়ে সময়োপযোগী এবং কার্যকর বিরোধ নিষ্পত্তি প্রক্রিয়া নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি। যাতে বিরোধ সংঘাতে রূপ নিয়ে আমাদের উন্নয়ন লক্ষ্যগুলোকে নষ্ট করতে না পারে। শ্রম সংস্কারের প্রতি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতিশ্রুতি স্পষ্টভাবে প্রতিফলিত হয় আইএলও গভর্নিং বডিতে আমাদের প্রতিনিধিত্ব এবং চলমান বিভিন্ন উদ্যোগের মাধ্যমে। এই উদ্যোগগুলো অভিযোগ নিষ্পত্তি, আপস এবং সালিসি ব্যবস্থাপনার মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করার গুরুত্বকে তুলে ধরে তিনি আরো বলেন, সামাজিক সংলাপ শুধুমাত্র বিরোধ নিষ্পত্তির একটি মাধ্যম নয়, এটি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির একটি হাতিয়ার এবং সামাজিক শান্তির একটি নিশ্চয়তা। নিয়োগকর্তা, শ্রমিক এবং সরকারি প্রতিনিধিদের একত্রিত করার মাধ্যমে আমরা একটি যৌথ অগ্রগতির দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তুলতে পারি। তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি আজকের সংলাপ থেকে গৃহীত যৌথ ঘোষণা আমাদের সকলের জন্য একটি শক্তিশালী অগ্রগতি এবং সামগ্রিক শিল্প সম্পর্ক ব্যবস্থা ও চর্চার ক্ষেত্রে একটি নতুন অধ্যয়ের সূচনা করবে।
সংলাপ শেষে সামঞ্জস্যপূর্ণ শিল্প সম্পর্কের ওপর যৌথ ঘোষণাপত্র স্বাক্ষর করেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান, বাংলাদেশ ইমপ্লোয়ার্স ফেডারেশনের সভাপতি আরদাশীর কবির এবং ন্যাশনাল কো-অর্ডিনেসন কমিটি ফর ওয়ার্কাস এডুকেশনের চেয়ারপার্সন বাদল খান।
সংলাপে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান-সহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের কর্মকর্তাগণ, ইউরোপীয় ইউনিয়নের অ্যাম্বাসেডর এইস ই মাইকেল মিলার, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার সহকারী মহাপরিচালক ম্যানুয়েলা টোমেই, বাংলাদেশ শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি আরশাদীর কবির এবং আইএলও-এর কান্ট্রি ডিরেক্টর টুমো পুটিয়ানিন-সহ আইএলও-এর অন্য প্রতিনিধিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সূত্রঃপিআইডি