মানুষ ও সহায়-সম্পত্তি পুড়িয়ে ক্ষমতায় আসা যায় না -তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহ্মুদ বলেছেন, ‘জনগণের ওপর পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করে, মানুষ পুড়িয়ে, মানুষের সহায়-সম্পত্তি পুড়িয়ে সর্বোপরি পবিত্র কোরআন শরিফ পুড়িয়ে তাদের পক্ষে কখনোই ক্ষমতায় আসা সম্ভবপর নয়। সে কারণে বিএনপির ক্ষমতায় আসার কোনো সম্ভাবনা নাই।’
আজ সচিবালয়ে তথ্য অধিদফতর আয়োজিত ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষ্যে আলোকচিত্র প্রদর্শনী’ উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ সব কথা বলেন।
বিএনপি মহাসচিবের ‘বিএনপি যদি আগামী নির্বাচনে ক্ষমতায় না আসে, দেশ ৫০ বছর পিছিয়ে যাবে, ধ্বংস হয়ে যাবে’ বক্তব্য নিয়ে প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘আগামী নির্বাচনে না আসলে বিএনপিই ৫০ বছর পিছিয়ে যাবে। বিএনপি নামক দলটিকে টেকানোই তখন তাদের জন্য কঠিন হয়ে দাঁড়াবে।’
হাছান মাহ্মুদ আরো বলেন, ‘গত সাড়ে ১৪ বছরে দেশ যেভাবে এগিয়েছে সমগ্র পৃথিবী তার প্রশংসা করছে। জাতিসংঘের মহাসচিব, ভারতের প্রধানমন্ত্রী, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট, বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ও প্রধান অর্থনীতিবিদ, পৃথিবীর অন্যান্য রাষ্ট্রনায়করা এবং বিশ্বের শীর্ষ পত্রপত্রিকাও প্রশংসা করছে। দুঃখজনক হলেও সত্য, বিএনপি নেতা মির্জা ফখরুল সাহেব বা তাদের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ সেটি দেখতে পান না। এটি তাদের চেতনার দৈন্য, রাজনৈতিক দৈন্য আর দেখেও না দেখার ভান।’
বিএনপির তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবির প্রশ্নে সম্প্রচার মন্ত্রী বলেন, ‘মির্জা ফখরুল সাহেবের তো পাকিস্তানপ্রীতি আছে। তিনি কিছুদিন আগে বলেছেন- পাকিস্তানই ভালো ছিলো। উনারা পাকিস্তানকে অনুসরণ করে। পৃথিবীর কোথাও তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা নাই একমাত্র পাকিস্তান ছাড়া। আমার প্রশ্ন, তারা পাকিস্তানকে কেন অনুসরণ করে। যাদের এতো পাকিস্তানপ্রীতি তারা প্রয়োজনে পাকিস্তান চলে যেতে পারে। তাও যদি পাকিস্তান তাদের গ্রহণ করে আর কি।’
ড. হাছান বলেন, ‘আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে নানা ষড়যন্ত্র হচ্ছে। ষড়যন্ত্র ২০১৪ সালেও ছিলো, ২০১৮ সালেও ছিলো। কোনো ষড়যন্ত্রে লাভ হবে না। দেশ অব্যাহতভাবে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এগিয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।’
এর আগে বঙ্গবন্ধুর ওপর সপ্তাহব্যাপী চিত্র প্রদর্শনী উদ্বোধনকালে তথ্য অধিদফতরের এ উদ্যোগের প্রশংসা করেন তথ্যমন্ত্রী। প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি বলেন, ইতিহাসের পাতা থেকে বঙ্গবন্ধুকে মুছে ফেলার অপচেষ্টা সফল হয়নি বরং যারা মুছে ফেলতে চেয়েছিলো তারাই ইতিহাসের পাতা থেকে হারিয়ে গেছে। পৃথিবীর মুক্তিকামী মানুষের কাছে প্রেরণার উৎস স্বমহিমায় চিরভাস্বর বঙ্গবন্ধুর স্থান মানুষের হৃদয়ের মনিকোঠায়।
ড. হাছান বলেন, বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে বাংলাদেশ স্বাধীনতার দেড় দশকের মধ্যে একটি উন্নত সমৃদ্ধ দেশে রূপান্তরিত হতো। বঙ্গবন্ধুকে যখন হত্যা করা হয় বিভিন্ন সংস্থার পরিসংখ্যান অনুযায়ী সে বছর দেশে ১০ হাজার মেট্রিক টন অতিরিক্ত খাদ্য উৎপাদন হয়েছিলো, জিডিপি প্রবৃদ্ধি হার ছিলো ৯ দশমিক ৫৪ শতাংশ।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী বলেন, আজকে বঙ্গবন্ধুর রাষ্ট্র রচনার এবং বঙ্গবন্ধু কন্যার রাষ্ট্র পরিচালনার সার্থকতা সেখানেই যে, আমরা পাকিস্তানকে আরো ৭-৮ বছর আগেই সব সূচকে পেছনে ফেলে এগিয়ে গেছি, তারা আমাদের দিকে তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলে। দেশ মধ্যম আয়ে উন্নীত হয়েছে, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ দেশে উন্নীত হয়েছে। বাংলাদেশ আজকে পিপিপিতে ৩১তম অর্থনীতির দেশ জিডিপিতে ৩৫তম অর্থনীতির দেশ। পৃথিবীর কাছে একটি উন্নয়নের রোল মডেল।
সূত্রঃ পিআইডি