স্বাস্থ্য সচেতনতার ওপর গুরুত্ব দিন: প্রধানমন্ত্রী
স্বাস্থ্যের প্রতি সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, শুধু রোগ প্রতিরোধের বিষয়ে নজর দিলেই হবে না। মানুষ যাতে অসুখে না পড়ে সেজন্য সবাইকে স্বাস্থ্য সচেতন হতে হবে। পর্যাপ্ত ব্যায়াম ও স্বাস্থ্যবান থাকার জন্য বিশেষভাবে দৃষ্টি দিতে হবে। কারণ স্বাস্থ্য সুন্দর থাকলে মনও ভালো থাকে। তাই স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন নিন।
মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) জাতীয় স্বাস্থ্য সেবা সপ্তাহ ও জাতীয় পুষ্টি সপ্তাহের উদ্বোধন এবং ২০১৭-১৮ অর্থবছরে সংগৃহীত সরকারি অ্যাম্বুলেন্স ও জিপগাড়ি বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানুষের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে কাজ করে যাচ্ছে সরকার। আর নার্সিং একটি মহৎ পেশা। এ পেশায় নতুন প্রজন্মকে আগ্রহী করে তুলতে প্রয়োজনে আইন সংশোধন করা হবে।
আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে স্বাস্থ্যখাতের বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ সরকারই প্রথম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করে। আমরা উপযুক্ত মেডিকেল ও নাসিং শিক্ষার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিই। আমরা স্বাস্থ্যখাতে ব্যাপক উন্নয়ন করেছি।পাশাপাশি নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে।
‘স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে নানা উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। পাশাপাশি এখাতে দক্ষ ও প্রশিক্ষিত জনবল গড়ে তুলতে আরো তিনটি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। নতুন নতুন মেডিকেল কলেজ করা হচ্ছে।’
‘এক্ষেত্রে সবার আগে নজর দেয়া হচ্ছে শিক্ষার মানের ক্ষেত্রে। কেননা আমরা যাই করি তা মানসম্মত হতে হবে। পর্যায়ক্রমে দেশের প্রতিটি বিভাগে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলা হবে।’
তিনি বলেন, সরকার জনসংখ্যা নীতি, পুষ্টি নীতি প্রণয়ন করা হয়েছে। পাশাপাশি জাতীয় ওষুধ নীতিও প্রণয়ন করেছি।
‘তবে সবচেয়ে গুরুত্বপুর্ণ হচ্ছে পুষ্টিকর খাদ্য। এ বিষয়ে আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি। এর সঙ্গে আমিষের যোগান দেয়ার বিষয়েও নজর দেয়া হচ্ছে। গবেষণার ফলে বাংলাদেশ এখন মিঠা পানির মাছ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ। সুষম খাদ্য যাতে মানুষ গ্রহণ করে সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় প্রচারণা চালানো হবে।’
চিকিৎসক ও নার্সদের উদ্দেশ্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, চিকিৎসাসেবা দেয়ার ক্ষেত্রে যত্নবান হতে হবে। আমাদের বিশেষায়িত নার্সও লাগবে। যারা পোস্ট অপারেটিভ কিংবা হার্টের রোগীদের সেবায় নিয়োজিত থাকবে। সেক্ষেত্রে বিশেষায়িত নার্স তৈরি করতে হবে। বিদেশে ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে আমরা চাই দেশেই এর ব্যবস্থা হোক।
‘আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা, ইউনানী চিকিৎসা ও হোমিও চিকিৎসার উন্নয়ন এবং যুগোপযোগী করতেও দৃষ্টি দেবো, সে লক্ষ্য আমাদের রয়েছে।’
তিনি বলেন, আমাদের গৃহীত পদক্ষেপের ফলে মানুষের গড় আয়ু ৭২ বছরে উন্নীত হয়েছে। কমিউনিটি ক্লিনিকের সুফল ভোগ করছে দেশের সাধারণ মানুষ। ৩০ প্রকার ওষুধ সেখান থেকে বিনামূল্যে পাচ্ছেন তারা।
‘অতি দরিদ্রদের মাঝে ভাতা দেয়া হচ্ছে। যাতে বাচ্চাকে সুস্থ করে তুলতে মায়েদের কোনো সমস্যার পড়তে না হয়। এছাড়া প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবাও কমিউনিটি ক্লিনিকে পাচ্ছেন তারা।’
শেখ হাসিনা বলেন, এরইমধ্যে দেশের বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও হাসপাতালে চিকিৎসক ও নার্স নিয়োগ দিচ্ছি। তবে এখনও কিছু কিছু উপজেলায় চিকিৎসকের অভাব রয়েছে। এ বিষয়ে আমরা উদ্যোগ নিচ্ছি।
‘আর উপজেলা হাসপাতালে যাতে চিকিৎসাসেবা নির্বিঘ্ন হয় সেজন্য অ্যাম্বুলেন্স ও জিপ দেয়া হয়েছে। এছাড়া টেলি মেডিসিনের মাধ্যমেও দেশজুড়ে চিকিৎসাসেবা দেয়া হচ্ছে।’
তিনি বলেন, বর্তমান সরকার শুধু রাজধানী কেন্দ্রিক নয়, সমস্ত দেশের বিভিন্ন প্রান্তে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতের জন্য কাজ করে যাচ্ছে।
বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সূত্রঃ বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম