বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেছেন, নির্বাচন সকল দলের জন্য। শুধু বিএনপির জন্য, বিএনপিকে ক্ষমতায় তোলার জন্য কোনো নির্বাচন হবে না। নির্বাচন হবে সংবিধান অনুসারে এবং বর্তমান সরকারের নেতৃত্বে।
শনিবার বিকালে রাজশাহীতে এক বিশাল জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। মেনন বলেন, অসাম্প্রদায়িক শক্তিকে এক হতে হবে। যেন বিএনপি-জামায়াত মৌলবাদী শক্তি আর কখনোই ক্ষমতায় যেতে না পারে।
তিনি বলেন, সামনে নির্বাচন। গত নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিএনপি আগুন সন্ত্রাস করেছিল। পেট্রোল বোমা ছুড়েছিল। চারশো স্কুল-কলেজ পুড়িয়ে দিয়েছিল। পুলিশ হত্যা করেছিল। প্রিসাইডিং অফিসারকে হত্যা করেছিল। কি করে নাই তারা? আজকে আবার নির্বাচনকে সামনে রেখে তারা বলছে, হ্যাঁ তারা নির্বাচনে যাবে। তবে তাদের মতো করে। আমরা বলি- তাদের মতো করে কোনো নির্বাচন হবে না।
রাশেদ খান মেনন বলেন, আজকে বিএনপির নেত্রী জেলে। তিনি জেলে গেছেন এতিমের টাকা আত্মসাৎ করে। পৃথিবীর দিকে তাকালে দেখা যায়, কেবল বেগম জিয়া নয়, যারা এই দুর্নীতির দিকে যুক্ত তারা প্রধানমন্ত্রী হোন, আর প্রেসিডেন্ট হোন- তারা জেলে যান। এমন দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যক্তিকে কখনোই রাষ্ট্র ক্ষমতায় আনা যাবে না।
তিনি বলেন, সরকার স্বল্পোন্নত দেশকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত করেছে। তাই আসছে নির্বাচনে সিদ্ধান্ত নিতে হবে কাকে নির্বাচিত করতে হবে। আসছে নির্বাচনে শুধু প্রার্থীর ভাগ্য নির্ধারণ হবে না, নির্ধারণ হবে বাংলাদেশের ভাগ্যও। বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় এলে আবার লুটপাট হবে। দেশের টাকায় জঙ্গিবাদ সৃষ্টি করা হবে।
২১ দফার ভিত্তিতে সামাজিক নায্যতা-সমতা প্রতিষ্ঠাসহ মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অসাম্প্রদায়িক-গণতান্ত্রিক আধুনিক বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে রাজশাহী মহানগর ওয়ার্কার্স পার্টি এই জনসভার আয়োজন করে। নগরীর সাহেববাজার জিরোপয়েন্ট সংলগ্ন বড় মসজিদ প্রাঙ্গণে এই জনসভা অনুষ্ঠিত হয়।
এতে প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেন পার্টির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ও রাজশাহী সদর আসনের সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা। তিনি বলেন, এই রাজশাহীতে জঙ্গিবাদের উত্থান ঘটিয়েছিলেন বিএনপির নেতারা। আওয়ামী লীগ আর বাম নেতাদের হত্যা করতে বিএনপির কোন নেতা কত টাকা জঙ্গিদের দিয়েছিল তার হিসাব আছে আদালতে।
তিনি বলেন, ১৪ দলের ঐক্য থাকলে এই জঙ্গিদের মদদদানকারী দল কখনও ক্ষমতায় আসবে না। জামায়াতকে নিয়ে বিএনপি হাজার বছরেও ক্ষমতায় আসতে পারবে না। তাই ১৪ দলের ঐক্য ভাঙা যাবে না। আমরা কেউ যেন এটা না করি। এটা করলে তা হবে আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত।
জনসভায় আরও বক্তব্য দেন ঠাকুরগাঁও থেকে নির্বাচিত ওয়ার্কার্স পার্টির সংসদ সদস্য ইয়াসিন আলী ও মহানগর ওয়ার্কার্স পার্টির সম্পাদকম-লীর সদস্য অ্যাডভোকেট এন্তাজুল হক বাবু। সভাপতিত্ব করেন মহানগর ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি লিয়াকত আলী লিকু। সাধারণ সম্পাদক দেবাশীষ প্রামানিক দেবু এটি পরিচালনা করেন। জনসভায় উপস্থিত ছিলেন- মহানগর ওয়ার্কার্স পার্টির সম্পাদকম-লীর আরেক সদস্য আবুল কালাম আজাদ, জেলার সভাপতি রফিকুল ইসলাম পিয়ারুল, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল হক তোতা, মহানগরের সদস্য আবদুর রাজ্জাক, শ্রমিক ফেডারেশনের জেলার সভাপতি ফেরদৌস জামিল টুটুল প্রমুখ।
সূত্রঃ দৈনিক ইত্তেফাক
ছবিঃ সংগৃহীত